কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাশিনগর ডিগ্রি কলেজ ““উদ্দীপন” নামে একটি কলেজ বার্ষিকী প্রকাশ করছে জেনে আমি আনন্দিত । আকাশ সংস্কৃতির দুর্দান্ত পোশাকী প্রতাপে আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি ও সৃজনশীল মেধামনন আজ প্রায় অবরুদ্ধ। আমাদের ভবিষ্যৎ কর্ণদ্বার তরুণ প্রজন্মের বিচরণ ও বিনোদনের প্রধান ক্ষেত্র আজ মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এবং সেটেলাইট চ্যানেল। সৃষ্টিশীল সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার এ দুর্ভিক্ষকালে এটি একটি নিঃসন্দেহে মহতী উদ্যোগ । কেবল পাঠ্য পুস্তক ভিত্তিক সিলেবাস পড়ে কোন শিক্ষার্থী পরিপূর্ণ জ্ঞানার্জন করতে পারে না ।
এ জন্যই শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বিকাশের নানা শাখায় বিচরণ করা জরুরি। শিল্প সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান সকল মানবিক জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য সম্পন্ন হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ জ্ঞান বিকাশের ক্ষেত্রগুলো ক্রমশঃ সংকুচিত হয়ে আসছে । এ কলেজ বার্ষিকী তরুণ শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পচর্চার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করবে, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। যাঁদের অক্লান্ত শ্রম, মেধা আর নিবিষ্ট সহযোগিতায় এ প্রকাশনা সম্ভব হয়েছে তাদের সকলরে আন্তরিক অভিনন্দন।
মানব জীবনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষাই মানুষকে আলোকিত করে। প্রকৃত মানুষ গড়ে তোলে । এ আলোকিত মানুষই পারে জাতীয় জীবনে সবিশেষে অবদান রাখতে। প্রকৃত মানব সম্পদ তৈরিতে শিক্ষা হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার৷ যথাথ শিক্ষা বিস্তার ও ব্যক্তিত্ব গঠনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অনস্বীকার্য । সে অপরিহার্যতাকে বিবেচনায় নিয়ে সমাজে উচ্চ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কাশিনগর ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজ বার্ষিকী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দর্পণ, যার মধ্যে ফুটে উঠে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও সংস্কৃতির পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি । শ্রেণি কক্ষের কঠোর নিয়ম
শৃংঙ্খলার বাইরে শিক্ষার্থীদের মন ও মননের বিকাশ এবং এর পরিচর্চায় কলেজে বার্ষিকী প্রধান ভুমিকা পালন করে।
জকের নবীন কিশোররাই জাতির উজ্জ্বল কর্ণদ্বার । এদের ভিতর সুপ্ত রয়েছে অশেষ সম্ভাবনা ও বিপুল সৃজনী প্রতিভা । এ সৃজনশীলতাকে বিকশিত করার জন্যই সহ পাঠ্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই । মুলত এ সৃজনশীল চর্চাকে অব্যহত রাখার প্রত্যয়ে আমরা কলেজ বার্ষিকী প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। কলেজ বার্ষিকী প্রকাশে যাঁদের পরিকল্পনা, মেধা ও শ্রমযুক্ত হয়েছে সবার প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন ।
এ কলেজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ-পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে।